ইন্টারনেটে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার মহড়া দেবে রাশিয়া
ডিটেকটিভ আন্তর্জাতিক ডেস্ক
‘সাইবার প্রতিরক্ষা’ ব্যবস্থার অংশ হিসেবে ইন্টারনেটে সাময়িকভাবে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার মহড়া দেওয়ার পরিকল্পনা করছে রাশিয়া।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই পরীক্ষার আওতায় রাশিয়ার নাগরিক ও প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের ভেতরে নিজেদের মধ্যে তথ্য আদানপ্রদান করতে পারবে, তবে রাশিয়ার বাইরে ইন্টারনেটে যোগাযোগের পথ বন্ধ থাকবে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত পরিবর্তন আনার পথ তৈরি করতে গতবছরই একটি আইনের খসড়া রাশিয়ার পার্লামেন্টে তোলা হয়েছে। সব ঠিক থাকলে আগামি ১ এপ্রিলের আগেই ওই পরীক্ষা চালানো হতে পারে। রাশিয়া থেকে বহির্বিশ্বে সাইবার হামলা এবং অনলাইনে বিভিন্নভাবে অবৈধ হস্তক্ষেপ ও উসকানিমূলক কর্মকা-ের অভিযোগে দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়ে আসছে নেটো ও তাদের মিত্ররা। এই প্রেক্ষাপটে বিদেশি শক্তিগুলো কখনও যদি রাশিয়াকে ইন্টারনেটে বিচ্ছিন্ন করে ফেলার উদ্যোগ নেয়, সেই পরিস্থিতিতেও রুশ আইএসপিগুলো যেন সচল থাকতে পারে, সেই প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলা হয়েছে ‘ডিজিটাল ইকনোমি ন্যাশনাল প্রোগ্রাম’ নামের ওই খসড়া আইনে। এর অংশ হিসেবে ইন্টারনেট অ্যাড্রেস সিস্টেম বা ডিএনএস এর নিজস্ব সংস্করণ তৈরি করছে রাশিয়া, যাতে আন্তর্জাতিক সার্ভারের সঙ্গে যোগযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেও দেশের ভেতরে ইন্টারনেট সচল থাকতে পারে।
বর্তমানে যে ১২টি প্রতিষ্ঠান ডিএনএস-এর রুট সার্ভার দেখভাল করে, তার কোনোটিই রাশিয়ার নয়। তবে রাশিয়া ইতোমধ্যে মূল সার্ভারের বেশ কিছু কপি তৈরি করে নিয়েছে যাতে বহির্বিশ্বের সঙ্গে ইন্টারনেট যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেও কাজ চালিয়ে নিতে সমস্যা না হয়।
বিবিসি জানিয়েছে, আসন্ন মহড়ায় আইএসপিগুলো সমস্ত তথ্য পাঠাবে সরকার নিয়ন্ত্রিত একটি রাউটিং পয়েন্ট দিয়ে, যেখানে তথ্যগুলো ফিল্টার করা হবে।
যেসব তথ্য রাশিয়ার ভেতরে পাঠানো হয়েছে, সেগুলো নির্ধারিত ঠিকানায় যেতে দেওয়া হবে। আর যেসব তথ্য রাশিয়ার বাইরে পাঠানো হয়েছে, সেগুলো আটকে যাবে। কিন্তু সরকার নিয়ন্ত্রিত এই সিঙ্গেল রাউটিং পয়েন্ট দিয়ে সব তথ্য নেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারলে রাশিয়াতেও চীনের মত ব্যাপক সেন্সরশিপ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে। রুশ সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, সে দেশের আইএসপিগুলো ওই খসড়া আইনের প্রতি সমর্থন জানালেও কীভাবে এর বাস্তবায়ন হবে সে বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি। সরকার যে মহড়ার পরিকল্পনা করেছে, তাতে রাশিয়ার ইন্টারনেট ট্রাফিকে বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে আসতে পারে বলে আইএসপিগুলো মনে করছে।